থেমে নেই মুম্বাইয়ের জীবন

জীবন থেমে থাকে না। আপন গতিতেই তার পথচলা। গতকালও মুম্বাইয়ের আকাশে সূর্য উঠেছে। আলোকিত হয়েছে সেখানকার অলিগলি, রাজপথ। দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। দিনভর কোলাহল ছিল ফুটপাতে। ট্রেন চলেছে অন্যান্য দিনের মতোই।

সিরিজ বোমা হামলার এক দিন পরই মুম্বাইয়ের জীবনযাত্রা ছিল এমনই। অন্য ১০ দিনের মতোই মুম্বাইবাসী স্বাভাবিক থাকায় স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমও মুম্বাইবাসীর দৃঢ় মনোবলের প্রশংসা করেছেন।
মুম্বাইয়ের আবাসন ব্যবসায়ী ভিনোদ হিরানান্দিনি বলেছেন, ‘জীবন তাঁর স্বাভাবিক গতিতেই চলবে। যারা দিন আনে দিন খায়, জীবিকার তাগিদে তাদের ঘরের বাইরে যেতেই হয়। জীবনের জন্য এটা (মুম্বাই) খুব কঠিন একটা জায়গা।’
অবশ্য মুম্বাইয়ের জন্য এ রূঢ় অভিজ্ঞতা নতুন নয়। এর আগেও বহুবার রক্তাক্ত হয়েছে এই নগর। স্বজন হারানোর বেদনায় বারবার কেঁদেছে মুম্বাইবাসী। তবে সন্ত্রাসীদের এ ধরনের হামলার বিষয়টি অনেকটা নিয়তি বলে ধরে নিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
টাইমস অব ইন্ডিয়া এ হামলার ঘটনাকে বর্ণনা করেছে এভাবে—‘আবারও’। ট্যাবলয়েড মুম্বাই মিরর শিরোনাম করেছে ‘আবারও হামলা’ বলে। আরেক ট্যাবলয়েড মিড-ডে বলেছে, ‘কোনো শিক্ষাই হলো না, কখন ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ হবে।’
এর আগে মুম্বাই সর্বশেষ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় ২০০৮ সালে। প্রায় ১০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তিনটি বিলাসবহুল হোটেল, রেলস্টেশন, রেস্তোরাঁ ও ইহুদিদের সংস্কৃতি কেন্দ্রে হামলা চালায়। এতে ১৬৬ জন নিহত ও তিন শতাধিক আহত হয়।
ওই হামলার ক্ষতচিহ্ন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে ১৩ বছরের কিশোরী দেবিকা। বুধবারের হামলার ভয়াবহতা টেলিভিশনে দেখামাত্র সে তার বাবা নটবরলাল রতোয়ানের কাছে জানতে চায়, ‘সরকার কেন সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
জবাবে নটবরলাল রতোয়ান বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা মুম্বাই শহর ও সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের রাজনীতিবিদেরাই এর জন্য দায়ী। দরিদ্র-নিরীহ লোকজনের মৃত্যুতে তাদের তো কিছু যায়-আসে না।’
ভয়াবহ হামলার সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি ভুলতে না ভুলতেই বুধবার আবারও কেঁপে উঠল মুম্বাই। তিনটি পৃথক বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের গণপূর্তমন্ত্রী চাগান ভূজপাল বলেছেন, সন্ত্রাসীরা হামলার জন্য প্রধান লক্ষ্যস্থল হিসেবে মুম্বাইকে বেছে নিয়েছে। এখানে হামলা চালালে তা পুরো জাতিকে কাঁপিয়ে দেবে, একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিশ্বেরও মনোযোগ কাড়তে পারবে। আর সন্ত্রাসীরা সেটাই চাইছে।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger