যাত্রা শিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা সরকারের আরেকটি সময়োচিত উদ্যোগ। এর ফলে অবহেলিত এই শিল্পটি ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছে। আমাদের নাগরিক সমাজ অন্তত কিছুদিন হলেও নিয়মিত যাত্রা দেখতে পেরেছে। সরকারি অর্থায়নে দুটি বিভাগীয় শহরে দুটি যাত্রা উৎসব করা সম্ভব হয়েছে রাজনীতির কোলাহল যতই থাক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সংবিধান সংশোধন এবং আদালতের রায় নিয়ে যতই বিতর্ক চলুক, অন্যদিকে দেশে এখন সুবাতাস বইছে। সেটি হচ্ছে আমাদের সংস্কৃতির অঙ্গন। নাটক, সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, জাদু, সার্কাস ও যাত্রাপালার ঐকতান বাদনে সরব মাঠ ঘাট প্রান্তর। বলতে গেলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে চলছে সংস্কৃতির মহোৎসব।
এই যে শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার একটি আবহ বিরাজ করছে এবং এর পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে সরকার, এ সম্পর্কে পত্র-পত্রিকায় তেমন ব্যাপক প্রচারণা নেই। ফলে বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশদভাবে জানতে পারছে না সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বর্তমান মহাজোট সরকারের মহতী উদ্যোগের কথা।
২০১০-১১ অর্থবছরে সরকারের অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতা ও মানোন্নয়নে একটি প্রকল্প চালু করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্প থেকে অনুষ্ঠানের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে নাটক, সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্য, জাদু ও যাত্রা শিল্পের সংগঠনগুলো। গত মার্চ মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার মেয়াদ ১৫ জুনের মধ্যে। আমাদের কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং শিল্পকলা একাডেমীর সুপারিশক্রমেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি অনুমোদন করে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সমাজ-সংস্কৃতির উন্নয়ন অপরিহার্য। অতীতের সংস্কৃতিবিমুখ সরকারগুলো বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেনি। পাকিস্তান আমলে যে স্বৈরাচার শাসকরা রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করেছিল, তাদেরই প্রেতাত্মা ঢুকে পড়ে বাংলাদেশে কোনো কোনো সরকারের মগজে। বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরতরে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছিল তারা। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলার মধ্যেও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া বর্তমান সরকারের একটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ হয়ে রইল।
মূলত দেশ ও জাতির যথার্থ পরিচিতি, তার ইতিহাস, সংগ্রাম, ঐতিহ্য সবকিছুই প্রতিভাত হয়ে ওঠে সে দেশের সাংস্কৃতিক দর্পণে। শিল্পোন্নত দেশগুলোয় দেখা যায়, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি তথা নাটক, সঙ্গীত, নৃত্যকলা চর্চায়ও সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল উদাহরণ জাপানের 'কাবুকি' ও 'নো' থিয়েটার। শিল্প কারখানা, স্থাপত্যে অধিকতর সমৃদ্ধ এই দেশটি তার ঐতিহ্যকে ভুলে যায়নি। কাবুকি ও নো হচ্ছে সে দেশের এক ট্রাডিশনাল থিটোর আর্ট ফর্ম, যে থিয়েটারকে টিকিয়ে রাখতে জাপান সরকারকে পুঁজি খাটাতে হয় প্রতিবছর। শ্রদ্ধেয় নাট্য ব্যক্তিত্ব, এ দেশে অ্যাবসার্ড নাটকের পথিকৃৎ প্রয়াত সাঈদ আহমেদ একবার বলেছিলেন, এই দুই থিয়েটারের নান্দনিকতা এতটাই হৃদয়স্পর্শী যে, বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জাপান সফরে এলে নো ও কাবুকি দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন।
এত কিছু বলার অর্থ এটাই যে, সংস্কৃতির বহু উপাদান ছড়িয়ে আছে আমাদের এই স্বদেশভূমিতে। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে লোকসংস্কৃতির এক-একটি ধারা। কবিগান, হাফ-আখড়া, মনসামঙ্গল, রয়ানি, গম্ভীরা, পুতুলনাচ_ এসব কালেভদ্রে খুঁজে খুঁজে কোনো বার্ষিক অনুষ্ঠানের জন্য নাগরিক সমাজে নিয়ে আসা হয়। কাবুকি ও নো থিয়েটারের মতো বাঙালির পরিচয়বাহী এসব সাংস্কৃতিক শেকড়গুলোকে আমরা কি সমকালীন জীবনধারায় উপস্থাপন করতে পারি না? বর্তমান সংস্কৃতিবান্ধব সরকারই এটা পারে। সংস্কৃতির মানোন্নয়নে যে প্রকল্পটি চালু হয়েছে তার প্রথম মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। আগামী অর্থবছরে শুরু হবে দ্বিতীয় মেয়াদের কর্মসূচি। ওই কর্মসূচিতে লোকসংস্কৃতির উলি্লখিত বিষয়গুলোর জন্য একটা নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখছি।
শিল্পকলা একাডেমীতে আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের পর এখন চলছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের জাতীয় নাট্যোৎসব। ক'দিন আগে শেষ হলো পথনাট্যোৎসব। এসব উৎসবের উদ্দেশ্য শুধু নাটক মঞ্চায়নই নয়, অভিনয় ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণকে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে তাই তো আমরা দেখি নাটকে এসেছে নতুন প্রাণ, নতুন দায়বোধ।
সংস্কৃতিক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ সংস্কৃতিকর্মীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার এক রকম স্বীকৃতি বলেই আমরা মনে করি। তবে এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিক উন্নত রূপ দাঁড় করানো যায় এভাবে_ একটি নাট্য গবেষণাগার ও থিয়েটার ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রতিটি উপজেলায় সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, একটি জাতীয় আবৃত্তি একাডেমী প্রতিষ্ঠা।
যাত্রা শিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা সরকারের আরেকটি সময়োচিত উদ্যোগ। এর ফলে অবহেলিত এই শিল্পটি ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছে। আমাদের নাগরিক সমাজ অন্তত কিছুদিন হলেও নিয়মিত যাত্রা দেখতে পেরেছে। সরকারি অর্থায়নে দুটি বিভাগীয় শহরে দুটি যাত্রা উৎসব করা সম্ভব হয়েছে বলেই একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে যাত্রা সম্পর্কে যে গোঁড়ামি, যে উন্নাসিকতা ছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, এই আয়োজনে দর্শক সুস্থ যাত্রামুখী হতে পেরেছে।
সবশেষে একটা কথা বলা প্রয়োজন, সৃষ্টিশীল ও উন্নয়নমূলক যে কোনো কাজ শুরু করাটাই যথেষ্ট নয়, সার্বিক সাফল্য ও গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য এর ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হয়েছে। এর পরেই শুরু হবে শিল্পকলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদের বরাদ্দ বণ্টন। আশা করি আমাদের উলি্লখিত প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় আসবে।
২০১০-১১ অর্থবছরে সরকারের অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় সংস্কৃতির বিভিন্ন মাধ্যমের পৃষ্ঠপোষকতা ও মানোন্নয়নে একটি প্রকল্প চালু করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। এই প্রকল্প থেকে অনুষ্ঠানের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে নাটক, সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্য, জাদু ও যাত্রা শিল্পের সংগঠনগুলো। গত মার্চ মাস থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শেষ হওয়ার মেয়াদ ১৫ জুনের মধ্যে। আমাদের কয়েকজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং শিল্পকলা একাডেমীর সুপারিশক্রমেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রকল্পটি অনুমোদন করে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সমাজ-সংস্কৃতির উন্নয়ন অপরিহার্য। অতীতের সংস্কৃতিবিমুখ সরকারগুলো বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেনি। পাকিস্তান আমলে যে স্বৈরাচার শাসকরা রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করেছিল, তাদেরই প্রেতাত্মা ঢুকে পড়ে বাংলাদেশে কোনো কোনো সরকারের মগজে। বাঙালি সংস্কৃতিকে চিরতরে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছিল তারা। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলার মধ্যেও শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশ ও উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া বর্তমান সরকারের একটি দৃষ্টান্তমূলক কাজ হয়ে রইল।
মূলত দেশ ও জাতির যথার্থ পরিচিতি, তার ইতিহাস, সংগ্রাম, ঐতিহ্য সবকিছুই প্রতিভাত হয়ে ওঠে সে দেশের সাংস্কৃতিক দর্পণে। শিল্পোন্নত দেশগুলোয় দেখা যায়, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি তথা নাটক, সঙ্গীত, নৃত্যকলা চর্চায়ও সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল উদাহরণ জাপানের 'কাবুকি' ও 'নো' থিয়েটার। শিল্প কারখানা, স্থাপত্যে অধিকতর সমৃদ্ধ এই দেশটি তার ঐতিহ্যকে ভুলে যায়নি। কাবুকি ও নো হচ্ছে সে দেশের এক ট্রাডিশনাল থিটোর আর্ট ফর্ম, যে থিয়েটারকে টিকিয়ে রাখতে জাপান সরকারকে পুঁজি খাটাতে হয় প্রতিবছর। শ্রদ্ধেয় নাট্য ব্যক্তিত্ব, এ দেশে অ্যাবসার্ড নাটকের পথিকৃৎ প্রয়াত সাঈদ আহমেদ একবার বলেছিলেন, এই দুই থিয়েটারের নান্দনিকতা এতটাই হৃদয়স্পর্শী যে, বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা জাপান সফরে এলে নো ও কাবুকি দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন।
এত কিছু বলার অর্থ এটাই যে, সংস্কৃতির বহু উপাদান ছড়িয়ে আছে আমাদের এই স্বদেশভূমিতে। উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে লোকসংস্কৃতির এক-একটি ধারা। কবিগান, হাফ-আখড়া, মনসামঙ্গল, রয়ানি, গম্ভীরা, পুতুলনাচ_ এসব কালেভদ্রে খুঁজে খুঁজে কোনো বার্ষিক অনুষ্ঠানের জন্য নাগরিক সমাজে নিয়ে আসা হয়। কাবুকি ও নো থিয়েটারের মতো বাঙালির পরিচয়বাহী এসব সাংস্কৃতিক শেকড়গুলোকে আমরা কি সমকালীন জীবনধারায় উপস্থাপন করতে পারি না? বর্তমান সংস্কৃতিবান্ধব সরকারই এটা পারে। সংস্কৃতির মানোন্নয়নে যে প্রকল্পটি চালু হয়েছে তার প্রথম মেয়াদ শেষ হচ্ছে এ মাসেই। আগামী অর্থবছরে শুরু হবে দ্বিতীয় মেয়াদের কর্মসূচি। ওই কর্মসূচিতে লোকসংস্কৃতির উলি্লখিত বিষয়গুলোর জন্য একটা নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রাখছি।
শিল্পকলা একাডেমীতে আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবের পর এখন চলছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের জাতীয় নাট্যোৎসব। ক'দিন আগে শেষ হলো পথনাট্যোৎসব। এসব উৎসবের উদ্দেশ্য শুধু নাটক মঞ্চায়নই নয়, অভিনয় ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনগণকে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা। মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে তাই তো আমরা দেখি নাটকে এসেছে নতুন প্রাণ, নতুন দায়বোধ।
সংস্কৃতিক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ সংস্কৃতিকর্মীদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার এক রকম স্বীকৃতি বলেই আমরা মনে করি। তবে এই প্রকল্পের আওতায় সংস্কৃতির প্রাতিষ্ঠানিক উন্নত রূপ দাঁড় করানো যায় এভাবে_ একটি নাট্য গবেষণাগার ও থিয়েটার ইনস্টিটিউট স্থাপন, প্রতিটি উপজেলায় সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, একটি জাতীয় আবৃত্তি একাডেমী প্রতিষ্ঠা।
যাত্রা শিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা সরকারের আরেকটি সময়োচিত উদ্যোগ। এর ফলে অবহেলিত এই শিল্পটি ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছে। আমাদের নাগরিক সমাজ অন্তত কিছুদিন হলেও নিয়মিত যাত্রা দেখতে পেরেছে। সরকারি অর্থায়নে দুটি বিভাগীয় শহরে দুটি যাত্রা উৎসব করা সম্ভব হয়েছে বলেই একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে যাত্রা সম্পর্কে যে গোঁড়ামি, যে উন্নাসিকতা ছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, এই আয়োজনে দর্শক সুস্থ যাত্রামুখী হতে পেরেছে।
সবশেষে একটা কথা বলা প্রয়োজন, সৃষ্টিশীল ও উন্নয়নমূলক যে কোনো কাজ শুরু করাটাই যথেষ্ট নয়, সার্বিক সাফল্য ও গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য এর ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হয়েছে। এর পরেই শুরু হবে শিল্পকলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে সংস্কৃতিবিষয়ক প্রকল্পের দ্বিতীয় মেয়াদের বরাদ্দ বণ্টন। আশা করি আমাদের উলি্লখিত প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় আসবে।
Post a Comment