মোবারকের পদত্যাগ ছাড়া কোনো সমঝোতা নয়

প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার মিসরে লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভ করে। জনসমুদ্র হয়ে পড়ে রাজধানী কায়রো ও বন্দরনগর আলেকজান্দ্রিয়া। কায়রোতে দুই লাখের বেশি মানুষের সমাবেশ ঘটে। হোসনি মোবারকের ৩০ বছরের শাসনামলে সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভের ঘটনা এটি।

এদিকে মিসরের বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি গতকাল ঘোষণা করেছে, হোসনি মোবারক পদত্যাগ না করা পর্যন্ত শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সমঝোতায় বসতে রাজি না তারা। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে জনগণকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, বিক্ষোভ দমনে বল প্রয়োগ করা হবে না। খবর বিবিসি, রয়টার্স, আলজাজিরা ও এএফপির।
মিসরের অন্যতম পুরোনো রাজনৈতিক দল ওয়াফদ গতকাল ঘোষণা করেছে, দেশের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছুসংখ্যক বিরোধী দল ‘একটি জাতীয় ফ্রন্ট’ গঠনের ব্যাপারে একমত হয়েছে। এক বিবৃতিতে ওই দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট মোবারক তাঁর বৈধতা হারিয়েছেন।
সরকারবিরোধী এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা হয়ে ওঠা মোহাম্মদ এলবারাদি স্থানীয় আল-অ্যারাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, মোবারকের শুক্রবারের মধ্যেই পদত্যাগ করা উচিত। তাঁকে অবশ্যই দেশ ছাড়তে হবে। এর আগে সরকারের সঙ্গে বিরোধী পক্ষের কোনো সমঝোতা আলোচনায় বসা সম্ভব না। এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা এই সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবিতে গত ২৫ জানুয়ারি মিসরের বিভিন্ন স্থানে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি গতকাল মিসরের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
গত সোমবারের ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল বিক্ষোভের অষ্টম দিনে কারফিউ উপেক্ষা করে সকাল থেকেই কায়রোর কেন্দ্রস্থল তাহরির স্কয়ারে জড়ো হতে শুরু করে মোবারকবিরোধীরা। সকাল ১০টার মধ্যেই সেখানে ১০ হাজারের বেশি মানুষ সমবেত হয়। দিনভর মোবারক ও সরকারবিরোধী স্লোগানে জমজমাট থাকে সমাবেশস্থল। সেখানে অনেকটাই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। মানুষ নানা ধরনের বাদ্য বাজিয়ে, চিৎকার করে স্বতঃস্ফূর্ত এই জমায়েতকে প্রাণবন্ত করে রাখে। তবে কায়রোতে প্রবেশে গতকাল কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। শহরের সংযোগ সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে বাইরে থেকে কেউ সমাবেশে যোগ দিতে না পারে। বিক্ষোভ দমনে বাস, ট্রেন ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলও সীমিত রাখা হয়। তারপরও বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মানুষ শহরের কেন্দ্রস্থলে জড়ো হতে থাকে।
দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর আলেকজান্দ্রিয়াতেও বিশাল গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। শহরের এল-রামল স্টেশনের কাছে কায়েদ ইব্রাহিম মসজিদ প্রাঙ্গণে দুপুরের মধ্যে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের জমায়েত হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতে মোবারকের বিকৃত চেহারার ছবি, সরকারবিরোধী প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন দেখা গেছে। তারা মিসরের পতাকা হাতে মোবারকের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। একটি অংশকে মোবারকের প্রতীকী কফিন বহন করতে দেখা গেছে।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger