গ্রিনল্যান্ডে নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগেই সূর্যের উঁকি

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সব হিসাবনিকাশ ভুল প্রতিপন্ন করে উত্তর গোলার্ধের এলাকা গ্রিনল্যান্ডে নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগে সূর্যোদয় হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবার সেখানে সূর্য ওঠার কথা ছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার দুপুর একটায় সবাইকে অবাক করে আর্কটিক অঞ্চলের সর্ব পশ্চিমের শহর লুলিসাতে সূর্যদেব উঁকি দেন।

গোলার্ধ অঞ্চলে পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার মতো সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত হয় না। দুই মেরু অঞ্চলে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দিনের আলো অথবা রাতে অন্ধকার থাকে। এলাকাভেদে সূর্যের আলোর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতির মেয়াদ সেখানে টানা ছয় মাস পর্যন্ত হতে পারে। ‘পোলার সার্কেল’ বা মেরুচক্রের ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় এ মেয়াদ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। মেরুচক্রের সবচেয়ে প্রান্তবর্তী এলাকায় একটানা ছয় মাস দিনের আলো এবং টানা ছয় মাস অন্ধকার থাকে।
বিজ্ঞানীদের গাণিতিক ছক অনুযায়ী এত দিন সূর্য ও পৃথিবীর গতিপ্রকৃতির নির্ভুল হিসাব পাওয়া যাচ্ছিল। সূর্য কখন, কোন অবস্থানে থাকবে, সে হিসাব কখনো ভুল প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু গত মঙ্গলবার লুলিসাত শহরে সূর্যের এই ‘অকালবোধন’ বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে।
বিজ্ঞানীদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আর্কটিক এলাকায় হিমশৈল দ্রুত গলে যাওয়ার কারণে দিগন্তসীমা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিচু হয়ে গেছে। সে কারণে নির্ধারিত সময়ের দুই দিন আগেই সূর্য দৃশ্যমান হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এই তত্ত্ব সঠিক হলে এটাই প্রমাণিত হবে যে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা মেরু এলাকায় যে মাত্রায় বরফ গলছে বলে এত কাল ধারণা করে আসছেন, সে ধারণার চেয়ে অনেক গুণ বেশি গতিতে বরফ গলছে। তবে সূর্যের এই ‘আগাম উপস্থিতি’র এটাই যে মূল কারণ, সেটা তাঁরা নিশ্চিত করে বলেননি। এ ঘটনার নিশ্চিত ব্যাখ্যা না পাওয়ার কারণে তাঁরা চিন্তিত রয়েছেন।
ভিয়েনায় অবস্থিত সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট ফর মেটেরোলজির ভূ-পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক উলফ্যাং লেনহার্থ বলেছেন, নক্ষত্রপুঞ্জে কোনো অবস্থানগত পরিবর্তন আসেনি। তেমনটি হলে সারা পৃথিবী লন্ডভন্ড হয়ে যেত। পৃথিবীর কক্ষপথ ও সেখানে তার পরিভ্রমণ-সম্পর্কিত তথ্য-উপাত্ত প্রতি মুহূর্তে বিজ্ঞানীরা সংগ্রহ করছেন, গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানের খোঁজখবর রাখছেন। সে সব তথ্যে কোনো অনিয়মের আভাস পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় দুই দিন আগে সূর্যের উপস্থিতি তাঁদের ভাবিয়ে তুলেছে।
গ্রিনল্যান্ডের থমাস পোচ শহরে অবস্থিত ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান-বিষয়ক ইনস্টিটিউট বলেছে, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বরফের পাহাড়গুলো গলে ক্রমেই উচ্চতা হারাচ্ছে। এতে দিগন্তের উচ্চতাও কমে এসেছে। ফলে সূর্য নির্ধারিত সময়ে উদিত হলেও দিগন্তসীমা নিচু হওয়ার কারণে তাকে আগেভাগে দেখা গেছে। ডেইলি মেইল অনলাইন।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger