হতভাগ্য ১০ বাংলাদেশি শ্রমিকের লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন স্বজনরা

ফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১০ বাংলাদেশির লাশ গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকায় আসার পর তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পররাষ্ট্র এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে স্বজনরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লাশ গ্রহণের পর রাতেই তাঁদের গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

জানা যায়, নিহত এসব বাংলাদেশি বৈধভাবে চাকরি নিয়ে গত ৬ ও ৮ ডিসেম্বর মরিশাসে গিয়েছিলেন। গত বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ফ্লাক অঞ্চলের সেন্ট জুলিয়েন ডি হটম্যান এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তাঁরা। তাঁরা সবাই একটি গার্মেন্ট কারখানায় সিউয়িং মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে লাশ হয়ে ফিরে আসতে হলো তাঁদের।
বিমান থেকে একে একে হতভাগ্য শ্রমিকদের লাশ নামিয়ে আনা হলে বিমানবন্দরে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে সেখানকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। স্বজনদের পাশাপাশি উপস্থিত অনেক সাধারণ মানুষও তাদের অশ্রু সংবরণ করতে পারেনি।
এ ছাড়া ওই ঘটনায় ইলিয়াছ গাজী নামে আরো এক বাংলাদেশি মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে মারা যান। তাঁর লাশও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার এসএস (ইমিগ্রেশন) মাজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল রাত পৌনে ৯টায় কফিনবাহী ইকে-৫৮৫ নম্বরের এমিরেটস এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের সিনিয়র সহকারী সুপার এইচ এম আজিমুল হক কালের কণ্ঠকে জানান, পররাষ্ট্র, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নিহতদের স্বজনদের কাছে লাশ হস্তাস্তর করা হয়। কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কারিকান্দি ইউনিয়নের বান্দারামপুর গ্রামের রেণু মিয়া গত রাতে কালের কণ্ঠকে জানান, ছেলে সেলিমের লাশ গ্রহণের পর রাতেই গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। মাত্র ১৫ দিন আগে তাঁর ছেলে মরিশাসে গিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিহতদের প্রত্যেকের বীমা করা ছিল। বীমার চুক্তি অনুযায়ী তাঁদের পরিবার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পাবে।
নিহতদের মধ্যে সাতজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং অন্য তিনজন কুমিল্লা জেলার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতজন হলেন সরাইলের সাকাইতির সোলাবাড়িয়া গ্রামের আলি আবজালের ছেলে আকতার, কসবার সাইদাবাদ গ্রামের ইউসুফের ছেলে আল মামুন ও আবদুল হাকিমের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান, মুকুন্দপুরের গোয়ালনগর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে জয় হোসেন, আশুগঞ্জের বাহাদুরপুরের দুর্গাপুর গ্রামের আলী আফজালের ছেলে রকিবুল হাসান, আখাউড়ার গঙ্গাসাগরের নিলাখাদ গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ সাইদুর ও কসবার চান্দহারের চকচন্দ্রপুর গ্রামের জাজু মিয়ার ছেলে সাগর। কুমিল্লার তিনজন হলেন তিতাস উপজেলার নারান্দি ইউনিয়নের সুকান্দা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে জাহিদুল ও সোনাকান্দা গ্রামের মনু মোল্লার ছেলে মোক্তার এবং কারিকান্দি ইউনিয়নের বান্দারামপুর গ্রামের রেণু মিয়ার ছেলে সেলিম।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger