আল-কায়েদাকে দৌড়ের ওপর রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র

ঙ্গিবাদবিরোধী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, আফগানিস্তান থেকে আরব উপসাগর পর্যন্ত আল-কায়েদাকে দৌড়ের ওপর রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ৯/১১-এর হামলার ঘটনার পর থেকে প্রায় এক দশকের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে রয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে ওবামা এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি দলীয় মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।
ওবামার ভাষণে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টিই মূলত গুরুত্ব পায়। এ ছাড়া তিনি আল-কায়েদা ও জঙ্গিবাদের হুমকি, ইরাক ও আফগান পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন। আল-কায়েদা তাঁর দেশের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা হুমকি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ৯/১১-এর হামলার পর বর্তমানে পাকিস্তানের আল-কায়েদা নেতৃত্ব সবচেয়ে চাপের মুখে রয়েছে। প্রতিবেশী আফগানিস্তানে যুদ্ধরত মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী পাকিস্তানে আল-কায়েদার আস্তানা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।
ওবামা বলেন, ‘আল-কায়েদার নেতা ও কর্মীদের তাদের আস্তানা থেকে উৎখাত করা হচ্ছে। তাদের আশ্রয় ধীরে ধীরে কমে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘আফগান সীমান্ত থেকে আরব উপসাগর হয়ে বিশ্বের জন্য আমাদের বার্তা হচ্ছে, আমরা দমে যাব না, কোনো ছাড়ও দেব না। জঙ্গিদের পরাজিত করবই।’
দ্বিধাবিভক্ত মার্কিন কংগ্রেসে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য অন্যান্য দলের প্রতি আহ্বান জানান ওবামা। বাজেট ঘাটতি এবং বাণিজ্যে ভারত ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দিলেন ওবামা। রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা নতুন করে ঐক্য ও সংহতির আহ্বান জানান। প্রথা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বছরের শুরুতে কংগ্রেসের যৌথ সভায় বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনায় আগামী এক বছরের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ধারণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ওবামার এবারের ভাষণে দেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জরুরি সব তৎপরতার কথা উচ্চারিত হয়েছে। দেশে ব্যাপক কর্মহীনতা লাঘবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা প্রেসিডেন্ট উচ্চারণ করেছেন তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই। শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি জাতীয় বাজেট ঘাটতি মোকাবিলার জন্য সরকারি ঐচ্ছিক ব্যয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রকে এখনো পৃথিবীর সেরা সম্ভাবনার দেশ উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, ‘আমাদের জনশক্তি সবচেয়ে উৎপাদনশীল। পৃথিবীর সেরা সাফল্যের সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে। সেরা সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রে। সারা বিশ্ব থেকে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী প্রতিবছর উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে এসে থাকে।’ সময়ের পরিবর্তনকে ধারণ করে যুক্তরাষ্ট্রের এ শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার জন্য তিনি দেশবাসীর ঐক্য কামনা করেন।
প্রেসিডেন্ট বলেন, তাঁরা স্বাস্থ্য সংস্কার আইনের যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী। উল্লেখ্য, রিপাবলিকানরা ইতিমধ্যে ওবামার সর্বজনীন স্বাস্থ্যনীতি বাতিলের আইন প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। তবে জনগণের জন্য মঙ্গলজনক যেকোনো প্রস্তাব তিনি গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
যুক্তরাষ্ট্রের ভেঙে পড়া অভিবাসন আইনের সংস্কার নিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর বক্তব্যে কোনো সরাসরি ঘোষণা দেননি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কয়েক লাখ অবৈধ অভিবাসী এবং অভিবাসন আইনের সংস্কারের জন্য আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger