দ্রব্যমূল্যে প্রভাব পড়বে

লমানি মার্কেটের পর এবারে ডলার মার্কেট অস্থির হয়ে উঠছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলারের দাম হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। ডলারের চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ডলার সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতি অব্যাহত থাকলে ডলার সংকট তীব্র হবে পাশাপাশি ডলারের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাবে।

গতকাল রবিবার ব্যাংকে ৭১ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত ডলারের দাম ওঠে। আগে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম ছিল কমবেশি ৭০ টাকা। ডলারের দাম বাড়তে থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টেলিফোনে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার নিয়ন্ত্রণ করতো; কিন্তু গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোন ভূমিকাই ছিল না। ব্যাংকে ডলারের দাম বাড়ার ফলে কার্ব মার্কেটেও ডলারের দাম বেড়ে যায়। গতকাল কার্ব মার্কেটে ৭৩ টাকারও বেশি দামে ডলার কেনাবেচা হয়। আমদানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পায়; কিন্তু ব্যাংকগুলো চাহিদামত ডলার পাচ্ছে না। ফলে ব্যাংকেই ডলারের দাম ঊধর্্বমুখী হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্লিপ্ততায় ব্যাংকিং খাতের সংশিস্নষ্টরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, শুরুতে কলমানি বাজারের উলস্নম্ফন নিয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্লিপ্ত ছিল। যে কারণে কলমানি বাজারে সর্বোচ্চ রেকর্ড সুদে লেনদেনের উদাহরণ সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে মুদ্রার ফ্লোটিং এক্সচেঞ্জ রেট বা ভাসমান বিনিময় হার বা বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে এটি করা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে হস্তক্ষেপ করতো। প্রতিদিন টেলিফোন যোগা-যোগের মাধ্যমে মুদ্রা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতো। গতকাল বাজারে ডলারের দাম বেড়ে গেলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যদিও ভাসমান বিনিময় হারে বাজারে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই; কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স গ্রাহকদের সুবিধার্থে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কার্যকর বিনিময় হারের তুলনায় বেশি রেখে আসছে।

কার্যকর বিনিময় হার ধরলে ডলারের দাম ৪/৫ টাকা কমে আসবে; কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্লিপ্ততার কারণে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হবে। তাতে দ্রব্যমূল্যের ঊধর্্বগতি রোধ করা যাবে না, মূল্যস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাহিদামত ডলার বাজার না ছাড়লে বাড়তি দামে ব্যাংকগুলো অপরাপর ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনবে। তাতে আমদানি ব্যয় বাড়বে। আমদানিকৃত পণ্য দেশীয় বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে, যা ভোক্তা পর্যায়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি কার্যকারিতা হারাবে।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger