চোরের নিশানা থানা থেকে থানা

প্রবাদে আছে 'থানার পাশে কানা হাঁটে না।' কিন্তু চট্টগ্রামের আনিস মাহমুদ (৩০) নামের এক যুবক যেন এর ব্যতিক্রম। না হয়, পুলিশ কর্মকর্তাদের মালামাল চুরি করা তার পেশা হয় কী করে? এক থানা থেকে চুরি করে জামিনে মুক্তি পাওয়ার দুদিনের ব্যবধানে আরেক থানায় গিয়ে ধরা পড়ল সে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কোতোয়ালি থানা থেকে মালামাল চুরি করার সময় পুলিশ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।

আনিসের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে ঢুকে চুরির অভিযোগ রয়েছে। সে নেশার টাকা জোগাড় করার জন্যই চুরির অভ্যাস গড়ে তুলেছে বলে দাবি করেছে। তবে থানা বা পুলিশ কর্মকর্তাদের মালামাল চুরিই কেন তার লক্ষ্য_এ প্রশ্নের কোনো জবাব সে দেয়নি। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর সে কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে পুলিশের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।
পুলিশের সূত্র জানায়, আনিসের চুরির তালিকায় রয়েছে ইপিজেড পুলিশ ফাঁড়ি ও বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির মালামাল এবং হাটহাজারী সার্কেল এএসপি বাবুল আক্তারের ব্যক্তিগত ল্যাপটপ। আর গতকাল সে কোতোয়ালি থানায় ঢুকে এসআই সদীপ কুমার দাশের কম্পিউটার চুরি এবং এসআই সুকান্ত চক্রবর্তীর ফাইল ক্যাবিনেট ভাঙার চেষ্টা করছিল। এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় তার বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার মাসুক করিম সিকদার গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই যুবক সন্ধ্যার দিকে থানায় এসআই সদীপ কুমার দাশের চেয়ারে বসে কম্পিউটার খোলার চেষ্টা করছিল। এ সময় ওই কক্ষে কেউ ছিল না। আমি প্রথমে তাকে কম্পিউটার ম্যাকানিক মনে করে কিছু বলিনি। পরে সে পার্শ্ববর্তী এসআই সুকান্ত চক্রবর্তীর ফাইল ক্যাবিনেট খোলার চেষ্টা করলে আমার সন্দেহ হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আমি অন্য পুলিশ সদস্যদের ডেকে এনে তাকে আটক করি।'
গ্রেপ্তার হওয়া আনিস মাহমুদ প্রথমে চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও পরে কালের কণ্ঠকে জানায়, ফেনসিডিলের নেশায় আসক্ত হয়ে সে এ ধরনের চুরির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তার দাবি, সে আগে ইস্টার্ন ওভারসিজ শিপিং লাইনে প্রধান নির্বাহী হিসেবে চাকরি করত। নেশার কারণে তার চাকরি চলে যায়। এখন সে নেশা ছেড়ে দিয়েছে; কিন্তু বাঁচার প্রয়োজনে চুরি করতে হচ্ছে। গত রমজানে হাটহাজারীর সার্কেল এএসপি বাবুল আক্তারের ল্যাপটপ চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার সে জামিনে মুক্তি পায়। কেন সে বার বার পুলিশ কর্মকর্তাদের মালামাল চুরি করে_এই প্রশ্ন করা হলে কোনো জবাব না দিয়ে চুপ করে থাকে।
কোতোয়ালি থানার এসআই নেজাম উদ্দিন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আনিস ইস্টার্ন ওভারসিজ নামে যে শিপিং লাইনের পরিচয় দিয়েছে প্রকৃত অর্থে সে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিল না। সে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে সখ্যতা গড়ে তোলে। এরপর নিয়মিত ওই অফিসে যাওয়া-আসার ফাঁকে সুযোগ বুঝে মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger