পাঁচবিবির লকমা রাজবাড়ি by মো. ফিরোজ হোসেন

য়পুরহাট থেকে উত্তরে লকমা গ্রাম। এই গ্রামের নামেই ঐতিহাসিক স্থানটির নামও "লকমা রাজবাড়ি" রাখা হয়েছে। এটি এখন প্রায় কিছুটা বিলুপ্তির পথে। তবে আশার কথা এই যে, কিছু তরুণ এই ঐতিহাসিক স্থানটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা এই লকমা রাজবাড়ির একটি কমিটি গঠন করেছে।
সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নানা প্রকার ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে এই স্থানে। এতে প্রবেশের মূল্য মাত্র ৫ টাকা । জানা যায়, হাজার বছর আগে নির্মাণ কাজ শেষে এ প্রাসাদটির নাম দেয়া হয় লকমা রাজবাড়ি। আজ পর্যন্ত এ নামেই পরিচিতি লাভ করছে এ স্থানটি। বংশানুক্রমে আজও এর মালিক বিদ্যমান। এই রাজবাড়ির মোট কক্ষের সংখ্যা ছিল ১৭টি। অধিকাংশ কক্ষ ছিলো ঘুটঘুটে অন্ধকার। প্রধান প্রাসাদকে ঘিরে এর পূর্ব পাশ্বর্ে আছে আরো একটি ছোট প্রাসাদ। আর এই ছোট প্রাসাদেই চৌধুরীর দূতরা রাখত এক পাল হাতি। দেশ ভাগ হয়ে যাওয়ার পর এই রাজবাড়ির কিছু অংশ ভারতের মধ্যে পড়ে। তার মধ্যে রয়েছে একটি আশ্চর্য পুকুর ও একটি কালী মন্দির। পুকুরটি অবস্থিত ছিল রাজবাড়ির পশ্চিম উত্তর কর্নারে। রাজবাড়ির পাশে আছে হাজার বছরের পুরাতন একটি মসজিদ। রাজবাড়ির কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই এই মসজিদের কাজ শেষ হয়। অনেক আগের কথা হলেও সত্য যে, রাজবাড়ির এই মসজিদটিতে চৌধুরী বংশের লোক ছাড়া আর অন্য কেউ নামাজ পড়তো না। কিন্তু বর্তমানে মসজিদটিতে সকল মুসলস্নী নামাজ পড়েন। পূর্বে রাজবাড়ি পরিদর্শন করার মতো তেমন কোন অবস্থা ছিল না। অনেক ভয়ানক অবস্থা ছিল রাজবাড়িটির। বর্তমানে এ স্থানটি পরিষ্কার করা হয়েছে এবং ফুলের বাগানসহ যাবতীয় কাজকর্ম চলছে। সুন্দর এই মনোরম পরিবেশে অনেক দর্শনার্থী ভিড় করে বিশেষ করে ছুটির দিনে। পূর্বে রাজবাড়ি কত তলা ছিল তা বলা মুসকিল কিন্তু বর্তমানে ৩য় তলা পর্যন্ত বিদ্যমান। জানা যায়, এক সময় একটি নতুন বউসহ একটি কক্ষ বন্ধ হয়ে যায়। আজও বন্ধ দরজাটি দেখা যায় প্রাসাদের নিচ তলার পূর্ব পাশ্বর্ে। রাজবাড়ি দর্শন করতে হলে অবশ্যই সাহস থাকা প্রয়োজন। কারণ দুইটি সিঁড়িসহ অধিকাংশ ঘর ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিচ তলা থেকে উপর তলা এবং উপর তলা থেকে নিচ তলায় প্রবেশ করার জন্য সিঁড়িগুলো অত্যন্ত ঘন অন্ধকার। তবে আলোর ব্যবস্থা করে আসলে উপভোগ করা যাবে সম্পূর্ণ রাজবাড়িটি। এই ছিল রাজবাড়ির মোটামুটি স্মৃতি কথা। তবে এখানেই শেষ নয়, রাজবাড়ি দর্শন করতে আসলে আরো একটি সুন্দর জায়গা দেখতে পাওয়া যাবে তা হলো মিড়া পীর সাহেবের মাজার। এ মাজারটি হলো কড়িয়া বাজার হতে এক কিলোমিটার পশ্চিমে একটি ছোট নদীর পাশ্বর্ে। মাজারকে ঘিরে একটি মসজিদ এখানে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবছর এখানে একটি বিশাল তাফসিরুল কোরআন মাহফিল হয়ে থাকে। এ মাহফিলে অনেক লোকজন সমাগম হয়। অনেকে আবার মুরগি, খাসি ও চাল দান করে এ মাহফিলে। আপনার যে কোন অসুখ হোক না কেন আপনি মাজারে এসে নিয়ত করে মাফ চাইবেন। আলস্নাহ তাআলা আপনার রোগ মাফ করে দিতে পারেন। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছে অনেক প্রমাণ রয়েছে।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger