মজুদদাররা ধান মজুদ শুরু করায় চালের দাম বাড়ছে

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার খোলাবাজারে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রি শুরু করলেও তা কাজে আসছে না। আমনের ভরা মৌসুমে শুক্রবার দাম আরেক দফা বেড়েছে। বেড়েছে ভোজ্যতেল ও আটার দামও। তবে অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

গতকাল রাজধানীর নিউমার্কেট, মহাখালী বাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি মোটা চাল ২ টাকা বেড়ে ৩৫ থেকে ৩৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য চালও কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা বেড়ে মিনিকেট মানভেদে ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, পাইজম ৪০ থেকে ৪২ টাকা, লতা ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা, পারি ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা, নাজিরশাইল ৪৭ থেকে ৫০ টাকা, স্বর্ণা ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা ও হাসকি ৩৮ থেকে ৩৯ টাকায় বিক্রি হয়।

চালের দাম বাড়ার কারণ হিসাবে রাজধানীর পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মজুদদাররা ধান মজুদ শুরু করেছেন। এর প্রভাবে হাটবাজারে ধানের দাম বেশি। বর্তমানে মোটা ধান ৭৬০ থেকে ৮০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে বলে তারা জানান। রাজধানীর চালের বড় পাইকারী বাজার বাবুবাজারের জনপ্রিয় রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী হাজী মো: আব্দুল করিম ইত্তেফাককে বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে চালের দাম কমতির দিকে থাকলেও এবার উল্টো দাম বাড়ছে। তিনি বলেন, মোকামে চালের দাম বেশি। মিনিকেট, পুরনো নাজিরশাইল, বি-আর ২৮, ২৯ ও মোটা চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।

গতকাল নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা চাকরিজীবী আমজাদ কবীর বলেন, এখন আমনের মৌসুম। কিন্তু তারপরও চালের দাম বাড়ছে। নিশ্চয়ই কোন কারসাজি রয়েছে। এছাড়া তেলের দামও বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এভাবে অযৌক্তিভাবে হঠাৎ করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়লে সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ে।

এদিকে গতকাল বাজারে চালের পাশাপাশি আরো দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন, পামঅয়েল ও আটার। সরকারের সংস্থা টিসিবির হিসাবে গতকাল খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সয়াবিনে ১ থেকে ২ টাকা বেড়ে ৯৮ টাকা ও পামঅয়েল ৮৮ টাকায় বিক্রি হয়। তবে বাস্তবে দাম আরো বেশি। মৌলভীবাজারের পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মোঃ আলী ভুট্টো ইত্তেফাককে বলেন, আন্তজার্তিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেশি। আর দেশের ভোজ্যতেলের বাজার পুরোপুরিই আমদানি নির্ভর। তাই বিশ্ববাজারে দাম না কমলে দেশীয় বাজারে দাম কমার সম্ভাবনা কম। তবে সরকার যদি ভোজ্যতেলের উপর থেকে ভ্যাট তুলে দেয় তাহলে দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।

তবে অন্যান্য পণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি নতুন পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। ভারতীয় পিঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম কমবে বলে কারওয়ান বাজারের পিঁয়াজ ব্যবসায়ী তোফায়েল জানিয়েছেন। এছাড়া মসুর ডাল ( তুরস্ক/ কানাডা) মানভেদে ৭৫ থেকে ৮৬ টাকা, দেশী মসুর ৯৫ থেকে ১০২ টাকা, নেপালি মসুর ৯৮ থেকে ১০৪ টাকা, মুগ ডাল ১০৪ থেকে ১২৫ টাকা, এ্যাংকর ডাল ২৬ থেকে ৩০ টাকা, ছোলা ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, রসুন ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, শুকনা মরিচ ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, চিনি ৫৪ থেকে ৫৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা, গরুর মাংস ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা ও খাসির মাংস ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। গতকাল বাজারভেদে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে ফুলকপি প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পাতাকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা, পেঁপে ১০ থেকে ১২ টাকা, শসা ২৪ থেকে ২৫ টাকা, আলু ১৩ থেকে ১৫ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ১৬ থেকে ১৮ টাকা, গোল বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মরিচ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৪২ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এছাড়া প্যাকেট আটা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, খোলা আটা ৩৩ থেকে ৩৪ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৩৯ থেকে ৪০ টাকা, খোলা ময়দা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়।

কনজু্যমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) পণ্যমূল্য ও সেবা সার্ভিসের ব্যয়বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে-২০১০ বলা হয়েছে, গত বছর প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্যের ক্ষেত্রেই বিরাজ করেছে অস্থিরতা। ব্যয় প্রভাব জনজীবনের ওপর প্রচণ্ড চাপ ফেলেছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের অসঙ্গতি বাড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে হতাশা বাড়ছে।

ক্যাব-এর সভাপতি কাজী ফারুক বলেন, পণ্যমূল্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের যে সামান্য আয় বৃদ্ধি, সেটাও খেয়ে ফেলছে পণ্যের উচ্চ মূল্যবৃদ্ধি। এর ফলে নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ইত্তেফাককে বলেছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে সরকার সারাদেশে নায্যমূল্যে চাল বিক্রি শুরু করেছে। শিগগির
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger