আন্দোলন ঠেকাতে প্রশাসনই ভরসা আওয়ামী লীগের by হাসিবুল হাসান

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বড় দুই রাজনৈতিক জোটে এখনো সমঝোতা হয়নি। এরই মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই একের পর এক কঠোর কর্মসূচি দিচ্ছে বিরোধী দলীয় জোট।
আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে। বিরোধীদলের আন্দোলন মোকাবেলায় দলীয়ভাবে নেই কোনো পরিকল্পনা। আবার নেতা-কর্মীদের মধ্যেও আন্দোলন মোকাবেলায় নেই কোনো সাড়া। তাই বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলায় বর্তমানে প্রশাসনের ওপরেই নির্ভরশীল ক্ষমতাসীন দলটি।

দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন করে সহিংসতা বাড়াতে চাইছেন তারা। তাই হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি এবং দেশব্যাপী নৈরাজ্য ও সহিংসতা মোকাবেলার ভার আপাতত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরই থাকছে। আর এজন্যেই বিরোধী দলের হরতাল অবরোধের মতো কর্মসূচি মোকাবেলায় নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই ক্ষমতাসীনদের।

তফসিল ঘোষণার পরেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেয়ার সময় ‘বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি থাকবে কি না?’ এমন এক প্রশ্নের জবাবে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছিলেন, “সব ধরনের সহিংসতা ও নৈরাজ্য ঠেকাতে প্রশাসন প্রস্তুত আছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেলিন নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “আমরা এখন নির্বাচনমুখী। এই মুহূর্তে নির্বাচনের কর্মসূচির বাইরে অন্য কোনো কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করছি না।”

তিনি বলেন, “দেশের জনগণ নির্বাচন চায়। আমরা মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের জনগণ বিরোধী দলের নৈরাজ্যেরও জবাব দেবে।”

দলীয় সূত্র এবং মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলায় দলীয় নেতা-কর্মীদেরও পাচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের বড় শক্তি হিসেবে তৃণমূলকে ধরা হলেও দলের সুসময়ে সবখানেই তৃণমূল নেতারা থেকেছেন উপেক্ষিত, বঞ্চিত। তাই বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের দেখা গেছে প্রথমসারিতে, তারাই আজ ক্ষোভে, দুঃখে, অপমানে দল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

আবা্র অন্যদিকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর নানা অপকর্ম করে, দলকে যারা নানাভাবে কঠিন সমালোচনার মুখে দাঁড় করিয়েছেন, সেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ নামধারী সুবিধাবাদীরা এখন মাঠে নেই, সুযোগ খুঁজছে ভোল পাল্টাবার। তাই বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলায় আইনশৃঙঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই ভরসা মানতে হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের।

আন্দোলন মেকাবেলার বর্তমানে বিরোধী দলকে চাপে রাখাকেই কৌশল হিসেবে নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হযেছে। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘হরতাল ও অবরোধের নামে মানুষ হত্যার’ জন্য বিরোধীদলীয় নেতাকে দায়ী করে তাকে হুকুমের আসামি করা হতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন। এখন একই বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের অন্য শীর্ষ নেতারাও।

বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলার পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “বিএনপি আন্দোলনের দল নয়। বিএনপি আর কী আন্দোলন করবে? তাদেরকে কেবল এক মামলা দিয়েই ঠাণ্ডা করে দেয়া যায়। মামলার ভয়ে পিঠ বাঁচানোর জন্যই তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অতীতেও দেখা তাদের দলের সিনিয়র অনেক নেতাকে মামলার ভয়ে বোরকা পরে আদালতে যেতে।”

Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger