তারা দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়?- দুই পক্ষের কঠোর অবস্থান

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ঢাকা অভিমুখী ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ করতে দেওয়া হবে না বলে সরকার দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের লোকজনকে কোথাও জড়ো হতে দেবে না সরকার।
আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে অন্তত এক সপ্তাহ সরকার দেশে কোনো রাজনৈতিক গোলযোগ হতে দিতে চায় না। মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলামোটরে পেট্রলবোমায় পুলিশের সদস্য হত্যা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিরোধীদলীয় জোটের ১৮ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পেছনেও ওই একই উদ্দেশ্য।

নাশকতা ও ককটেল-পেট্রলবোমার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সরকারের মুখে সব সময় শোনা যাচ্ছে। এবার
২৯ ডিসেম্বর ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ ঠেকাতেও কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর
বাকি রেখেছে কি? যেকোনো নাশকতায় দু-চারজনের নাম দিয়ে শত শত বা হাজার হাজার ‘অজ্ঞাত’ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষে অনেকে মারা যাচ্ছেন। আর কত কঠোর হবে সরকার?

অন্যদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছেন, ২৯ ডিসেম্বর তাঁদের কর্মসূচিতে বাধা দিলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। তাঁদের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি পালনে বাধা দিলে পরিণতি কঠিন ও করুণ হবে বলেও তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

প্রশ্ন হলো, বিরোধী দল যেভাবে বাসে পেট্রলবোমা মেরে, ককটেল ফাটিয়ে মানুষ হত্যা করছে, অবরোধের নামে রেলের ফিশপ্লেট খুলে যাত্রী হত্যা, গাছ কেটে ‘জলবায়ু-অপরাধ’ সাধন, এমনকি বোমা মেরে গরু পুড়িয়ে মারার মতো ঘৃণ্য অপরাধ করে চলেছে, এরপর আর কত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে চায় ওরা? বিরোধী দল কি সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করছে?

আর কত হত্যা, রেললাইন উপড়ে ফেলা, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া, বাসে পেট্রলবোমা মারার পর বিরোধী দল বলবে,
যথেষ্ট কঠোর পরিণতি ডেকে আনা হয়েছে?  আর সরকারই বা আর কত জেল-জুলুম-নির্বিচার গুলি চালিয়ে বলবে, তারা যথেষ্ট কঠোর হয়েছে?

স্বাভাবিক বিচার-বিবেচনা থাকলে কোনো দায়িত্বশীল দল রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বা কোনো সরকার বিরোধী দলের কর্মসূচি দমনের নামে এত নির্মম আচরণ করতে পারে না। রাজনীতি মানুষের জন্যই। তাই রাজনীতির জন্য যেন একজন নাগরিকের প্রাণও বিপন্ন না হয়, তা দেখা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কর্তব্য। যাঁরা সরকারের আছেন, তাঁদের দায়িত্ব আরও বেশি। কারণ, সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনার জন্যই তাঁদের জনগণ নির্বাচিত করেছে।

২৯ ডিসেম্বর ঘিরে দেশে সৃষ্ট অনিশ্চিত পরিস্থিতির অবসান হোক। সরকার ও বিরোধী পক্ষ আরও দায়িত্বশীল আচরণ করুক। মানুষ শান্তিতে থাকতে চায়। তাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়াই এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ।

Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger