বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি শুরু করতে পারবে ইরাক

রাকের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। ১৯ বছর আগে সাদ্দামের শাসনামলে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এর ফলে দেশটি এখন বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পারবে। এ ছাড়া তেলের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
গত বুধবার নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের সর্বসম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়। ইরাকের রাজনৈতিক অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাবে পরমাণু, রাসায়নিক ও জীবাণু বোমা তৈরির কর্মসূচি থেকে ইরাককে বিরত রাখাসংক্রান্ত একটি নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে। এর ফলে দেশটির বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি গ্রহণের পথ উন্মুক্ত হলো। সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি করছেন—এই অজুহাত তুলে ২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালায় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইরাক থেকে সেই ধরনের কোনো অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি মার্কিন বাহিনী। এর আগে ১৯৯১ সালে ইরাক প্রতিবেশী রাষ্ট্র কুয়েত দখল করে নিলে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে নিরাপত্তা পরিষদ। সাদ্দামের পতনের পর ২০০৩ সালে অবশ্য বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও গতানুগতিক কিছু অস্ত্রসংক্রান্ত কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের অপর একটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ইরাকের খাদ্য কেনার জন্য তেলের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় সাদ্দাম হোসেন ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত খাদ্য ও ওষুধ কেনার জন্য তেল বিক্রি করেন। এ ছাড়া এতে ইরাকের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছেড়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তৃতীয় প্রস্তাবে ইরাকের উন্নয়ন তহবিলের মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। দেশটির তেল ও রাজস্ব বিভিন্ন বিষয় পরিচালনার জন্য ২০০৩ সালে ওই তহবিল গঠন করা হয়।
খাদ্য কেনার জন্য তেল বিক্রিসংক্রান্ত প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ফ্রান্স ভোট দানে বিরত থাকে। তবে অন্য সব প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে পাস হয়।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, যে পরিস্থিতিতে ইরাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, এখন দেশটির পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরাকের গণতান্ত্রিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বান কি মুন বলেন, ইরাকের ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের উদ্যোগ ইরাককেই নিতে হবে। দেশটিকে কুয়েতের সঙ্গে সীমানা নিশ্চিত করা ও যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও উদ্যোগ নিতে হবে।
বাগদাদ এখনো তার তেল বিক্রির শতকরা পাঁচ ভাগ অর্থ যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে কুয়েতকে দিয়ে যাচ্ছে। কুয়েত যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইরাকের কাছ থেকে দুই হাজার ২০০ কোটি ডলার দাবি করেছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ইরাকে ভয়াবহ হামলার সংখ্যা কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, ইরাক এখন স্থিতিশীল ও নিজের ওপর আস্থাশীল একটি জাতিতে পরিণত হচ্ছে।
ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসায়ের জেবারি বলেন, ইরাকের নতুন সরকার কুয়েতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাকে গুরুত্ব দেবে। তিনি বলেন, ‘আগের শাসনামলে যুদ্ধ ও অবিশ্বাসের কারণে ইরাকের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল তা থেকে আমরা বেরিয়ে আসব।’ বিবিসি, এএফপি, এপি অনলাইন।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger