জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হইয়াছে গত বৃহস্পতিবার। যুগপৎ বাহির হইয়াছে জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল। জেএসসি-তে পাসের গড় হার ৭১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। জেডিসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের হার ৮১ দশমিক শূন্য ৩।

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় পাসের হার দেখা যাইতেছে কম। এই পরীক্ষায় শতকরা প্রায় তিরিশজন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হইয়াছে। যাহারা উত্তীর্ণ হইয়াছে তাহাদের মধ্যে আবার বেশিরভাগই পাইয়াছে 'সি' গ্রেড। এইবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম। এই ফলাফল উচ্ছ্বসিত হওয়ার মত না হইলেও ইহাকে নৈরাশ্যজনক বলা যাইবে না। কেননা, অষ্টম শ্রেণীতে এই প্রথম একযোগে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হইয়াছে, তাহাও আবার সৃজনশীল পদ্ধতিতে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নূতন অবস্থায় কিছুটা অসুবিধা হওয়ারই কথা। এমতাবস্থায় অনেকেই হয়ত আশানুরূপ ফল করিতে পারে নাই। ক্রমান্বয়ে এই অবস্থাটি কাটিয়া যাইবে। প্রাথমিক ও জুনিয়র পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের নিমিত্ত পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাটি অদূর ভবিষ্যতে সুফল আনিয়া দিবে বলিয়া আশা করা যায়।

প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল বিশেস্নষণে দেখা যায় অকৃতকার্য ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই খারাপ করিয়াছে ইংরেজি ও অংক বিষয়ে। সত্য বটে, ইংরেজি বিদেশি ভাষা। এই বিষয়ে সব সময়ে, সব পরীক্ষাতেই ছেলেমেয়েদের অধিকাংশই অপেক্ষাকৃত কম নম্বর পাইয়া থাকে। জুনিয়র পরীক্ষাতেও তাহা পুনরাবৃত্তি ঘটিয়াছে, খানিকটা বেশিমাত্রায়। তাহার পরও আমরা বলিব এই অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা। বর্তমান বিশ্বের কর্মজগতে প্রতিযোগিতায় টিকিয়া থাকার জন্য ইংরেজি বলিতে ও লিখিতে পারা অত্যাবশ্যকীয়। এই ভাষাটি জানা না থাকিলে বিশ্বায়নের যুগে বিভিন্ন পেশায় প্রকৃত দক্ষ-যোগ্য ব্যক্তিও অনেক সময় নিজেকে তুলিয়া ধরিতে পারেন না। কাজেই এই ভাষাটি ভাল করিয়া শেখা দরকার। মাতৃভাষাও সঠিক-শুদ্ধভাবে বলিতে ও লিখিতে পারিতে হইবে। অন্যদিকে, অংক বিষয়টি জীবনের প্রায় সর্বক্ষেত্রে কম-বেশি সকলেরই প্রয়োজন। তদুপরি অংক শিক্ষার্থীদের চিন্তাশক্তি বাড়ায়। ইহা মস্তিষ্কের চমৎকার ব্যায়াম।

বলাই বাহুল্য, মানুষের জানাশোনা ও জ্ঞানার্জনের ভিত্তিভূমিটি নির্মিত হয় শৈশবে-কৈশোরে, স্কুল পর্যায়ে। অনুশীলনের মাধ্যমে শেখার ক্ষমতা বাড়াইবার ইহাই সর্বোত্তম সময়। স্কুল পর্যায়ে ইংরেজি ও অংকসহ অন্যান্য বিষয়ে জোর দেওয়া হইলে ভবিষ্যতে তাহারা আরও ভাল করিবে। ক্রমান্বয়ে আরও বেশি জানা, বেশি শেখা তাহাদের জন্য সহজ হইয়া আসিবে। এবারের ফলাফলের আলোকে বলা বাঞ্ছনীয় যে, দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইংরেজি ও অংক বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

এইবারের জেএসসি এবং জেডিসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাই। তাহাদের শিক্ষাজীবন সুন্দর ও সার্থক হউক।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger