কিছু এনজিওর তৎপরতায় শিল্প খাতে অস্থিরতা, বাড়ছে বেকারত্ব

কদিকে নেই কোনো সুস্পষ্ট নীতিমালা, অন্যদিকে একের পর এক আসছে নানা ধরনের নির্দেশনা। দুইয়ের মাঝে পড়ে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আবাসন, জাহাজ ভাঙা, স্টিল ও রি-রোলিং মিল এবং সংশ্লিষ্ট তিন শতাধিক উপশিল্প খাতের উদ্যোক্তারা।

জাহাজ ভাঙা, নির্মাণ শিল্প, অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল বিনিয়োগও ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সারা জীবনের সঞ্চয় ও ব্যাংক ঋণ বিনিয়োগ করে যাঁরা অধীর অপেক্ষায় দিন গুনছেন স্বপ্নের ফ্ল্যাট ও প্লটে ওঠার জন্য, চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন তাঁরাও।
উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্বব্যাপী পরিবেশদূষণের জন্য সবার আগে দায়ী যেসব শিল্পোন্নত দেশ, তাদের অনেকেই পরিবেশবিষয়ক
বিশ্ব সনদে স্বাক্ষর করেনি। যুক্তরাষ্ট্র কিয়োটো প্রটোকলে স্বাক্ষর করেনি। এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন ও উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রথম দিকে থাকা প্রতিবেশী দেশ ভারতও পরিবেশ রক্ষার নামে উন্নত দেশগুলোর চাপিয়ে দেওয়া শিল্পবিরোধী শর্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র অর্থনীতির একটি দেশে হাতে গোনা কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠনের কারণে একের পর এক আইনি জটিলতার আবর্তে আটকে যাচ্ছে এসব খাতের উন্নয়ন। বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত এসব এনজিও কাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অন্যথায় উল্লিখিত খাতগুলোতে বিপর্যয়ের কারণে সরকার ব্যাপক হারে জনপ্রিয়তা হারাবে, যার বিরূপ প্রভাব পড়বে আগামী জাতীয় নির্বাচনেÑএমন মন্তব্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি, বিদ্যমান সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর অনুমতি বা ছাড়পত্র নিয়েই আবাসন ও জাহাজ ভাঙা শিল্পগুলো কয়েক দশকে গড়ে উঠেছে এবং বিকাশ লাভ করেছে। সরকারি অনুমোদন যাচাই-বাছাই করেই ব্যাংকগুলো অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এসব শিল্পকে ঘিরে গড়ে উঠেছে নানা উপখাত। দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবিকা, স্বপ্ন ও বিনিয়োগ আবর্তিত হচ্ছে এসব খাত-উপখাতকে ঘিরে।
পরিবেশবাদীদের সম্পৃক্ত রেখে ঢাকা মহানগরীর জন্য প্রণীত ভবিষ্যৎমুখী মহাপরিকল্পনাÑডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) এখনো অনুমোদিত হয়নি। জাহাজ ভাঙা শিল্পকে পরিবেশবান্ধব করার জন্য পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এসব বিষয় চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রচলিত পরিবেশ আইন এবং আনুষঙ্গিক অন্য নিয়মনীতির আলোকেই শিল্পগুলোর কর্মকাণ্ড চলার কথা। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু শুধু পরিবেশের দোহাই দিয়ে সামগ্রিকভাবে কোনো শিল্পকে স্থবির করে দেওয়ার প্রচারণাকে দেশীয় পুঁজি ও শ্রমঘন শিল্পের বিরুদ্ধে দেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই দেখছেন আবাসন, জাহাজ ভাঙা ও রি-রোলিং শিল্পের উদ্যোক্তারা। তাঁদের মতে, যেসব এনজিও এ ধরনের শিল্পের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তারা কাদের প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করছে, তা এখনই খুঁজে দেখা প্রয়োজন। তাঁরা বলছেন, আবাসন শিল্পে রয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। এর এক-তৃতীয়াংশই প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা। মধ্য আয়ের মানুষের সঞ্চয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমাণ ঋণের টাকাও গচ্ছিত আছে এ খাতে। এ খাতকে ঘিরে গড়ে উঠেছে প্রায় ২৭০টি উপখাত। এগুলোতে রয়েছে ছোট-বড় প্রায় ১০ হাজার শিল্প, যেখানে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত।
জাহাজ ভাঙা শিল্পে রয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১০ লাখ মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে এ শিল্পের সঙ্গে। স্টিল ও রি-রোলিং মিলে নিয়োজিত আছে প্রায় তিন লাখ শ্রমিক। উদ্যোক্তারা বলেন, জাহাজ ভাঙা খাতের স্থিতিশীলতার ওপরই স্টিল ও রি-রোলিং খাতসহ এমএস রডের বাজারের স্থিতি নির্ভর করছে। দেশি রডের সরবরাহ কমলে দাম বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়নকাজে। দেশি রডের সরবরাহে ঘাটতির অজুহাতে কোনো কোনো মহল রড আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ স্টিল ও রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা গত রবিবার বাণিজ্যমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বলেছেন, দেশে চার শরও বেশি রি-রোলিং মিল রয়েছে। কারখানাগুলোতে উৎপাদিত এমএস রড দেশের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ করে। এ শিল্পে বছরে প্রায় ৩৫ লাখ টন কাঁচামালের দরকার হয়। এর ৮০ শতাংশই আসে দেশের জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে। জাহাজ ভাঙা বন্ধ থাকায় কাঁচামালের সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে স্ক্র্যাপের দামও বাড়ছে। এভাবে সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলার অপচেষ্টা চলছে। কাঁচামালের অভাবে ইতিমধ্যে অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে। আরো কিছু বন্ধ হওয়ার পথে। শিল্প বন্ধ হওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হচ্ছে। এতে সমাজে নানা অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।
কাঁচামাল সমস্যার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলো নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান। তিনি বলেন, পরিবেশসম্মতভাবে জাহাজ ভাঙা শিল্প গড়ে তুলতে নেদারল্যান্ডসের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। দেশটি সহায়তা দেবে বলে প্রতিশ্র“তি দিয়েছে। পরিবেশ ও উন্নয়নের মধ্যে ভারসাম্য রেখে জাহাজ ভাঙা শিল্প গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য পরিবেশ মন্ত্রণালয় নীতিমালা তৈরির কাজ করছে। নীতিমালা প্রকাশিত হলে জাহাজ আমদানিতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের মন্ত্রিসভা কমিটি ড্যাপ নিয়ে কাজ করছে। তাদের সুপারিশ এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত না হওয়ায় ড্যাপ কার্যকর হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতেও গুটিকয়েক বেসরকারি সংস্থা দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে জড়িত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে তীব্র বিরোধিতায় নেমেছে। তারা আবাসন খাত, ভূমি উন্নয়ন খাতের সঙ্গে জড়িত কোটি কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, এসব খাতে বিনিয়োগ করা হাজার হাজার কোটি টাকার ভবিষ্যৎ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু পরিবেশ রক্ষার নামে নানা ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আবাসন উন্নয়ন এবং ভূমি উন্নয়ন খাতে ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজউকের হিসাব অনুযায়ী আবাসন উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় দুই শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রাজউক ২৬টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। বাকি ১৭৪টি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতে এ খাতের অবদান শতকরা ২১ ভাগ। এ খাতে বিনিয়োগ করা টাকার ৩০ শতাংশ এসেছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ থেকে। তাঁরা ২১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এসব খাতে সরাসরি প্রায় ৫০ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। তাদের সঙ্গে জড়িত প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। এসব মানুষের অন্ন সংস্থান হচ্ছে উল্লিখিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থেকেই। হাউজিং এবং ভূমি উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত ৩০০টি শিল্প উপখাত। এসব খাতেও যেমন বিনিয়োগ করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা, তেমনি শিল্পগুলোতে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছে দেড় কোটি এবং পরোক্ষভাবে তিন কোটি মানুষ। তাদের সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেকের পরিবার। আবাসিক এবং ভূমি উন্নয়নকাজ কোনোভাবে ব্যাহত হলে কোটি কোটি লোক বেকার হয়ে যাবে। চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়বে এসব শ্রমিকের পরিবারগুলো।
প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালার বিভিন্ন ধারায় বিধিনিষেধগুলো সুস্পষ্টভাবে নির্দেশ করা হয়েছে। বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০০৪-এর ১৬(৩) বিধিতে যেকোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের বিষয়ে বলা হয়েছে। জলাধার সংরক্ষণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা অমান্য করে মাটি ভরাটের মাধ্যমে জমির শ্রেণী পরিবর্তনের জন্য শাস্তির বিধান স্পস্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০০৪ জারির আগে থেকে বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে ওই বিধিমালার সংশ্লিষ্ট ধারায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। এসব আইন কার্যকর হচ্ছে কি না তা দেখভালের দায়িত্ব রাজউক বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এসব সংস্থা যথাযথভাবে কাজ না করায় আবাসন খাত উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করেছেন এমন সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হতে বসেছেন।
রাজউকের কাছে অনুমোদনপ্রত্যাশী ১৭৪টি প্রকল্প দীর্ঘ ১৫-১৬ বছর ধরে জাতীয় প্রচারমাধ্যমগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচার করে আসছে। কিন্তু রাজউক এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ আরোপ বা বাধা দেয়নি। এমনকি অনুমোদনপ্রত্যাশী প্রকল্পগুলোর বিরুদ্ধে রাজউক কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি। ফলে বিজ্ঞাপন দেখে সাধারণ মানুষ এসব প্রকল্প থেকে প্লট বা ফ্ল্যাট কিনেছে জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষার নামে দু-একটি এনজিও লাখ লাখ মানুষের সোনালি স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এনজিওগুলো সাধারণ ক্রেতার কথা বিবেচনায় না নিয়ে আবাসন খাত উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা মহানগরের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ড্যাপ পর্যালোচনার জন্য সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি ১৬টি আবাসন প্রকল্প ও স্থাপনা এবং দুই হাজার ৭২৪টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ড্যাপের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ (নন-কনফার্মিং) হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কমিটি প্রকল্পগুলো অনুমোদন না দিতে এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছে। আবাসন প্রকল্পগুলোর মধ্যে ছয়টি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি। ড্যাপ নিয়ে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। ওই প্রতিবেদনে ড্যাপ বাস্তবায়িত হলে সরকার রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ড্যাপ বাস্তবায়িত হলে আগামী ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে ঢাকা ও এর আশপাশের ২৯টি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যরা ড্যাপ মেনে নিতে পারছেন না। সরকারদলীয় সদস্যরাও ড্যাপের প্রচণ্ড বিরোধিতা করছেন। এই ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হলে পাঁচ লাখেরও বেশি স্থাপনা ভাঙতে হবে। এতে জাতীয় অর্থনীতির ওপরও ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ড্যাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বিপুলসংখ্যক মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে। এ সুযোগে বিরোধী দলও একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে সরকারকে ঠেলে দেওয়ার সুযোগ পাবে। ফলে ঢাকার বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থাকে আমলে নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য করণীয় নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
দীর্ঘ চার পৃষ্ঠার ওই গোপনীয় প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘রাজধানী ঢাকার ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) বাস্তবায়নে প্রতিকূলতা প্রসঙ্গে’। সরকার যাতে বিপাকে না পড়ে, এ জন্য গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে কিছু সুপারিশও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদে ‘মন্তব্য ও সুপারিশ’ শীর্ষক উপশিরোনামের ‘ক’ থেকে ‘চ’ পর্যন্ত রয়েছে ছয়টি সুপারিশ। একটিতে বলা হয়েছে, এই ড্যাপ বাস্তবায়িত হলে আর্মি হাউজিং সোসাইটি প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হবে। এতে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা আছে, যা বর্তমান সরকারের প্রতি তাঁদের আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। কিছু এনজিও পরিবেশ রক্ষার নামে সরকারকে দিয়ে এসব কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা সফল হলে দেশের অর্থনীতি মারাÍকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসায়ীরা সরকারের বিরুদ্ধে খেপে উঠবে। এনজিওগুলো মূলত পরিকল্পিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে নানাভাবে। শুধু ব্যবসায়ীদেরই নয়, সাধারণ মানুষকেও নানাভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যেই গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ রাস্তায় নেমে এসে এর প্রমাণ দিয়েছে। কাজেই এসব এনজিও কাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে, তারা কাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে, তা এখনই খুঁজে বের করা প্রয়োজন এবং একই সঙ্গে এমন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে এ ধরনের এনজিওগুলো আর সরকার এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger