বিডিআর এখন বর্ডার গার্ড

নাম বদলে গেল বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর। বাংলাদেশ রাইফেলস বা বিডিআর এখন থেকে পরিচিত হবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ নামে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিডিআর নামেই পরিচিত ছিল বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ২০০৯ সালের বিদ্রোহ ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর বিডিআর আইন পরিবর্তনের দাবি ওঠে। একই সঙ্গে বিডিআর বা বাংলাদেশ রাইফেলস নাম পরিবর্তনের দাবিও ওঠে। সংসদে এ নিয়ে বিল ওঠার পর কণ্ঠ ভোটে তা পাস হয়।

এর আগে পরিবর্তিত হয়েছে বাহিনীর পোশাক। নাম ও পোশাক পরিবর্তনের পাশাপাশি বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ বিলে। বাংলাদেশ রাইফেলসের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ করার বিলটি সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর। সেই দিনই বিলটি আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। গত ৬ ডিসেম্বর সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ১৫০টি সংশোধনীসহ বিলটি সংসদে উপস্থাপন করে। এর আগে গত ১২ জুলাই বিলটি সংসদে উত্থাপনের জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়। বর্ডার গার্ড বিল ২০১০-এ ২৪ ধরনের অপরাধের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্রোহসহ ১২টি অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। অন্যান্য অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী দুই বছর থেকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। বিলের ১১২ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে এক বা একাধিক বর্ডার গার্ড আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে পারবে এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট ট্রাইব্যুনালে একজন সভাপতি ও দুজন সদস্য থাকবেন। মহাপরিচালকের অনুপস্থিতিতে নূ্যনতম উপমহাপরিচালক পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালের সভাপতি হবেন এবং পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা সদস্য হবেন। এ ছাড়া বাহিনীর কার্যাবলি, ক্ষমতা ও দায়িত্ব আরো বিস্তৃত ও সুস্পষ্ট করা হয়েছে। সুযোগ রাখা হয়েছে জুনিয়র কর্মকর্তাদের পদোন্নতির। বাকস্বাধীনতা, সংগঠন প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো বিধান আগে ছিল না, বর্তমান আইনে তা রাখা হয়েছে।
২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ ও পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর সুশৃঙ্খল এ বাহিনী নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। তখনই বাহিনীর ভেতরে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উদ্যোগ নেওয়া হয় পরিবর্তনের। বিডিআরের নাম ও পোশাক বদলে ফেলার পাশাপাশি বাহিনীর আইন বদলের চিন্তাও করা হয়। সেই চিন্তার ফসল এ বিল। এ বিল পাস হওয়ার পর দীর্ঘদিন বিডিআর নামে পরিচিত বাহিনী এখন থেকে বর্ডার গার্ড নামে পরিচিত হবে। বিডিআরের রয়েছে একটি গৌরবময় ইতিহাস। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে শুরুতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল বিডিআর। বিডিআর তখন ইপিআর নামে পরিচিত ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে পিলখানায় হামলা চালিয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিডিআর সদস্যরা বীরত্ব প্রদর্শন করেন। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠের দুজন এই বাহিনীর সদস্য। নাম বদল হলেও বর্ডার গার্ড অতীতের মতোই দেশের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি আমরা।
Share this post :

Post a Comment

Test Sidebar

 
Support : Creating Website | Johny Template | Mas Template
Copyright © 2011. BdNewsTest - All Rights Reserved
Template Created by Creating Website Published by Mas Template
Proudly powered by Blogger