বিএনপি ক্ষমতার জন্য উন্মাদ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মারছে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাঁদের কোনো মানবিকতা নেই।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বাসের ভেতর আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করছে, যাত্রীসহ সিএনজি অটোরিকশায় আগুন দিয়ে মানুষ মারছে। এমনকি তারা হেফাজত ও জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে কোরআন শরিফও পুড়িয়েছে। যারা মানুষ পোড়ায়, কোরআনে আগুন দেয়, তারা ধর্মে কীভাবে বিশ্বাস করে?’
বিরোধীদলীয় নেতাকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘কেন এভাবে পুড়িয়ে মানুষ মারবে? এতে তিনি কী পাচ্ছেন, কী লাভ হচ্ছে?’
শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা জনগণের অশান্তি চান। ‘“অশান্তি বেগমে”র আগুনে তো বাংলার জনগণ জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। দয়া করে আপনি (খালেদা জিয়া) মনের আগুন মনে রাখুন। ওই আগুনে বাস জ্বালিয়ে মানুষ পোড়াবেন না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষকে আগুনে পোড়ানো বন্ধ করে রাস্তায় নামুন। দেখি কী আন্দোলন করতে পারেন। লোক ভাড়া করে, বোমা-ককটেল মেরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবেন না। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের মারবেন না। যুব সমাজকে সন্ত্রাসী ট্রেনিং দেওয়া বন্ধ করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। চাইলে আমি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও দিতে রাজি আছি। দয়া করে মানুষ পুড়িয়ে মারবেন না। তাহলে মানুষ এর প্রতিশোধ নিবে। তখন যাবেন কোথায়? মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশের মানুষ কখন কী করে তার ঠিক নেই।’ তিনি বলেন, ‘তাদের যত ক্ষোভ সব সাধারণ মানুষের ওপর। গরিব কৃষকের কাছে শিক্ষা নিন কীভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি নিজে তাঁকে রেড ফোনে কল করেছি। আমি তাঁকে সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। হরতাল প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। আসলে উনি নির্বাচন চান না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করি, জনগণের গণতন্ত্রায়নে বিশ্বাস করি।’
বিরোধী দলের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতই চেষ্টা করুন না কেন, কেউ নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির দুই গুণ, দুর্নীতি আর মানুষ খুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক ব্যর্থ লোক আমাদের বুদ্ধি-পরামর্শ দেয়, আবার রাষ্ট্রপতির কাছেও যায়। আপনারা তাহলে কেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকা অবস্থায়ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারলেন না। কেন তাঁরা ব্যর্থ হলেন? আপনাদের ব্যর্থতার কারণেই তো ১/১১ সরকার দুই বছর ক্ষমতায় ছিল। এখন আমাদের ছবক দিতে আসেন।’
যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে পুনর্মিলনী সভায় আরও বক্তব্য দেন ভূমিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার জীবনী নিয়ে লেখা ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এ ছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য নাসির উদ্দিন ইউসুফ (চলচ্চিত্র), রফিকুল ইসলাম-মরণোত্তর (ভাষা), মুশফিকুর রহিম (খেলাধুলা), সিদ্দিকুর রহমান (খেলাধুলা), মোহাম্মদ এ আরাফাত (গণমাধ্যম) এবং ঝর্ণা বেগমকে (সাহসিকতা) বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
Post a Comment